নিজস্ব প্রতিনিধি: মাছ আমাদের প্রাণিজ আমিষের অন্যতম উৎস। কর্মসংস্থান, বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন এবং পুষ্টি সরবরাহে মাছের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। রাজশাহীতে নানা সমস্যায় জড়জড়িত মৎস্যচাষীরা। বিদ্যুৎ সমস্যা, পানির সমস্যাসহ প্রশাসনের অসহযোগিতায় ব্যহত হচ্ছে মৎস্যচাষ। মৎস্যচাষের অব্যাহত অসুবিধায় বিপাকে বড় বড় মৎস্যচাষীরা।
এ সমস্যায় মাছ চাষ হুমকির মুখে পড়েছে। এতে মাছের দাম বৃদ্ধি পেতে পারে। যখন দেশের চাহিদা পুর্ণ করে মাছ বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে, সেখানে শিল্পটি ধ্বংসে মৎস্য অধিদপ্তর ও বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কতৃপক্ষ এবং বিদ্যুৎ বিভাগের অসহযোগীতাকে দায়ি করছেন স্থানীয় মৎস্যচাষীরা। এমনকি স্থানীয় প্রশাসনের বাধায় পুরাতন পুকুর সংস্কার করা যাচ্ছে না। ফলে মাছ চাষ আগের চেয়ে অনেক অংশে কম হতে শুরু করেছে।
নওহাটার মৎস্যচাষী সাদিকুল ইসলাম মেজো বলেন, কোয়ালিটি অনুযায়ী পোনা না পাওয়া, তাপমাত্রার সমস্যা, গ্রীষ্ম ও শীতকালীন রোগের সমস্যা, উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি, উৎপাদনের পর বাজারজাত করণে সমস্যা, মাছ সংরক্ষণ ও রপ্তানিতে নানা জটিলতা এখন মাছ চাষকে হুমকির মুখে ফেলেছে। এসব সমস্যায় সহযোগিতা করছেন না সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ।
মোহনপুরের মৎস্যচাষী খায়রুল বাশার বলেন, মৎস্যচাষ ধরে রাখতে হলে বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধান করতে হবে। অনেক সময় খামারিরা বিদ্যুৎ লাইন পান না, হতে হয় হয়রানির শিকার। বিদ্যুৎ এর বানিজ্যিক রেট ধরলে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পায়। যেহেতু এটা শিল্প তাই শিল্প খাতে বিদ্যুৎ বিল হওয়া উচিত। সোলারের মাধ্যমে সরকারের এ শিল্পে ভুর্তকি দিলে চাষীরা উপকৃত হবেন। উচ্চ তাপমাত্রায় পুকুরের পানি শুকিয়ে যাচ্ছে। এ সমস্যায় কোনো ধরনের পানি দিয়ে সহযোগিতা করছে না
বিএমডিএ। অন্যদিকে পুকুর সংস্কারে বাঁধা আসছে প্রশাসন থেকে। এসব সমস্যা গুলোর কারণে মাছ চাষ চরমভাবে হুমকিতে পড়ছে।
এদিকে বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে কিছু ভোগান্তিতে তারা পড়েন হয়তো, তবে বানিজ্যিক খাত ছাড়া শিল্পখাতে বিদ্যুৎ দেওয়া সম্ভব না।
জানতে চাইলে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বিদ্যুৎ ও পানির ক্ষেত্রে কিছু জটিলতায় পড়েছে মৎস্যচাষীরা। আইনি কিছু জটিলতায় বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে বিদ্যুতের মিটার ও বিলের সমস্যার কথা আমরা জেনেছি। পানির বিষয়ে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কতৃপক্ষের সঙ্গেও কথা বলা হয়েছে। যদিও মৎস্য চাষ কৃষির মধ্যে পড়ে তবুও তারা পানি পায় না বরেন্দ্র থেকে। বিষয়টি দুটি নিয়ে আমরা বিভাগীয় কমিশনার স্যার ও ডিসি মহোদয়ের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করছি।
রাজশাহী বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কতৃপক্ষের ইডি আব্দুর রশিদ বলেন, আমরা পানি না দিলে মৎস্যচাষীরা পানি পায় কোথা থেকে? আমরা পানি দেই। কারণ মৎস্যচাষ কৃষিরই অংশ। তবে বিদ্যুৎ বিভাগের কারণে কিছু স্থানে সমস্যা হচ্ছে। তারা বানিজ্যিক বিল করলে আমরা সেটার বিল দিতে পারিনা। শিল্প খাতে বিল হলে সেটা আমরা দিতে পারি।
এবিষয়ে রাজশাহী পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের জেনারেল ম্যানেজার রমেন্দ্র চন্দ্র রায় বলেন, আমরা যর্থাসাধ্য মৎস্যচাষীদের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা করছি। দু এক জায়গায় সমস্যা হতে পারে। তারা যদি আমার সাথে যোগাযোগ করে তাহলে সমস্যা সমাধান করে দিবো ইনশাআল্লাহ। বানিজ্যিক বিষয়টিও আমরা দেখছি।