নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিনজনসহ ৬২ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এর মধ্যে নয়টি সাধারণ সদস্য পদে ৪০ জন ও তিনটি সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১৯ জন। সোমবার পর্যন্ত জেলা নির্বাচন কার্যালয় থেকে তারা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।
চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল, জেলা পরিষদের বর্তমান প্রশাসক ও আওয়ামী লীগের প্রবীন নেতা মোহাম্মদ আলী সরকার এবং পবা উপজেলার বড়গাছি এলাকার আফজাল হোসেন।
এদের মধ্যে মোহাম্মদ আলী সরকার দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে মনোনয়ন তুলেছেন। বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে তিনি নির্বাচন করবেন। গত বারও দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেন। তিনি ভোট পেয়েছিলেন ৭৪২ এবং আওয়ামী লীগ মনোনিত তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী মরহুম মাহবুব জামান ভুলু ভোট পেয়েছিলেন ৪১৫।
রাজশাহীর বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী সরকার বর্তমানে জেলা পরিষদের প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি নগরীর ১৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য। এছাড়াও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের আগের কমিটির সদস্য ছিলেন তিনি।
গত শনিবার জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। এতে রাজশাহীতে দলীয় মনোনয়ন পান প্রবীন আওয়ামী লীগ নেতা ও মহানগরের সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল। তিনিসহ এবার ১০ জন আওয়ামী লীগ নেতা দলীয় মনোনয়নের জন্য আবেদন করেছিলেন।
মীর ইকবাল নিজেও বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ পরিবারের সন্তান। দলের জাতীয় পরিষদের এই সদস্য ১৬ বছর রাজশাহী নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও ২০০৪ সাল থেকে তিনি সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
জেলা পরিষদ নির্বাচনের সহকারি রিটানিং অফিসার শহিদুল ইসলাম জানান, সোমবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত চেয়ারম্যান পদে তিনজন, নয়টি সাধারণ সদস্য পদে ৪০ জন এবং তিনটি সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১৯ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। আগামী বৃহস্পতিবার ১৫ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টার মধ্যে তাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করতে হবে।
তিনি জানান, মনোনয়নপত্র সংগ্রহকারিদের মধ্যে সংরক্ষিত নারী সদস্যের ১ নং ওয়ার্ডে (গোদাগাড়ী, তানোর, পবা, সিটি করপোরেশন) চারজন, ২ নং ওয়ার্ডে (মোহনপুর, বাগমারা, দুর্গাপুর) সাতজন এবং ৩ নং ওয়ার্ডে (পুঠিয়া, চারঘাট, বাঘা) আটজন।
অপরদিকে, সাধারণ সদস্যের ১নং ওয়ার্ডে (গোদাগাড়ী) তিনজন, ২নং ওয়ার্ডে (তানোর) তিনজন, ৩নং ওয়ার্ডে (পবা-সিটি) পাঁচজন, ৪নং ওয়ার্ডে (মোহনপুর) তিনজন, ৫নং ওয়ার্ড (দুর্গাপুর) আটজন, ৬নং ওয়ার্ড (বাগমারা) পাঁচজন, ৭নং ওয়ার্ড (পুঠিয়া) পাঁচজন, ৮নং ওয়ার্ড (চারঘাট) দুইজন ও ৯নং ওয়ার্ড (বাঘা) ছয়জন।
শহিদুল ইসলাম জানান, রাজশাহী জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটার সংখ্যা ১১৮৫ জন। উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান, ইউপি চেয়ারম্যান ও ওয়ার্ড সদস্য, পৌরসভার মেয়র ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং সিটি করপোরেশনের মেয়র ও কাউন্সিলররা জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটার। তাদের ভোটে রাজশাহীতে একজন চেয়ারম্যান ও ১২ জন সদস্য নির্বাচিত হবেন। এর মধ্যে তিনজন সংরক্ষিত মহিলা সদস্য।
গত ২৩ আগস্ট নির্বাচন কমিশন রাজশাহীসহ ৬১ জেলা পরিষদ ভোটের তফসিল ঘোষণা করেন। তফসিল অনুযায়ী ১৭ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হবে। আগ্রহী প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। ১৮ সেপ্টেম্বর বাছাইয়ের পর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৫ সেপ্টেম্বর