November 23, 2024, 8:06 pm

News Headline :
রাজশাহীতে চাঁদাবাজি ও দখলদারত্ব বন্ধে কঠোর হুশিয়ারি যুবদল নেতা রবি’র পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যু রাজশাহীতে কোথাও স্থাপনা করতে না পেরে শেষমেস ভাঙারির দোকানে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে প্রস্তুত আ.লীগ: নাছিম রাজশাহীতে আলু ও তেলের দাম বাড়তি রাজশাহীতে ‘সমন্বয়ক’ সোহেল রানাকে ‘ভুয়া’ বললো মহানগর ছাত্রদল প্রধান উপদেষ্টার সাথে খালেদা জিয়ার মতবিনিময় দেশের সকল ক্ষমতার মালিক হবেন জনগণ: ড. মুহাম্মদ ইউনূস রাজশাহীতে মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ, প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন দালালের ফাইলে আগে সই করেন রাজশাহী পাসপোর্ট অফিসের ডিডি
রামেক হাসপাতালে পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনম প্রস্তুত রয়েছে

রামেক হাসপাতালে পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনম প্রস্তুত রয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর বাঘা উপজেলার পদ্মার চর (মানিকচর) এলাকার বাসিন্দা শাকিল আহমেদ। পেশায় কৃষিশ্রমিক শাকিল সোমবার ভোরে অন্যদের সঙ্গে চরের জমিতে বাদাম তুলতে যান। ফসল তোলা শুরুর এক পর্যায়ে তিনি বাম হাতে যন্ত্রণা অনুভব করেন। হাতের দিকে তাকিয়ে দেখেন রক্ত ঝরছে। সঙ্গী শ্রমিকরা বাদাম গাছে একটি সাপ দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে তারা সাপটিকে মেরে ফেলেন এবং শাকিলের হাত বেঁধে দ্রুত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানোর উদ্যোগ নেন। নদী পার করে মাত্র দেড় ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতালে তারা শাকিলের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে সক্ষম হন। সহকর্মীদের সহায়তায় এই যাত্রায় প্রাণে বেঁচে যান তিনি। পরে জানা যায়, তাকে রাসেলস ভাইপার কেটেছিল।

পবা উপজেলার নওহাটা পৌর এলাকার গৃহিণী রেহেনা বেগম গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাড়ির পাশের পুকুর থেকে পানি আনতে যান। এ সময় ঘাটে তার পায়ে একটি সাপ কামড় দেয়। দ্রুত বাড়িতে এসে বিষয়টি তার স্বামীকে জানাতেই বাড়ির সবাই তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (রামেক) নিয়ে যান।

গোদাগাড়ী উপজেলার কাকনহাট পৌরসভা এলাকার মাদ্রাসাপড়ুয়া শিশু আব্দুল্লাহ আল জুবায়েরও হাসপাতালে ভর্তি। গত মঙ্গলবার বৃষ্টিতে বাড়ির উঠানে জমা পানি সরাতে গিয়ে সাপের ছোবলের শিকার হন জুবায়ের। তবে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ায় সে এখন সুস্থ আছে। গত বুধবার দুপুরে শাকিল, রেহেনা ও জুবায়েরের সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হয় রামেক হাসপাতালের ৪২ নং ওয়ার্ডে। তাদের প্রত্যেককেই অ্যান্টিভেনম দেওয়া হয়েছে।

তবে তাদের মতো সবার সৌভাগ্য হয় না। গত ২৮ জুন গোদাগাড়ী উপজেলার রুবেল হাসপাতালে মারা যান। এর আগে তিনি সাপের কামড়ের শিকার হলে স্থানীয় ওঝার শরণাপন্ন হন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে রামেক হাসপাতালে আনা হয়। ততক্ষণে রুবেলের শরীরে সাপের বিষ বিস্তার করে ফেলে। এতে সে মারা যায়।

রামেক হাসপাতালের মুখপাত্র ও ইএমও ইনচার্জ (ইমারজেন্সি বিভাগ) ডা. শংকর কে বিশ্বাস বলেন, হাসপাতালে গত মঙ্গলবার সাপে কাটা মোট ১০ জন ভর্তি হয়েছে। এ ছাড়া গত ৭ দিনে ৪৪ জন এবং গেল ছয় মাসে চিকিৎসা নিয়েছে মোট ৩৯৯ জন সাপে কাটা রোগী। এর মধ্যে বিষধর সাপে কাটা ছিল ৫৯ জন। মারা গেছেন ১০ জন রোগী। তাদের মধ্যে পাঁচজনই রাসেলস ভাইপার সাপে কাটা ছিলেন।

এ অবস্থায় পদ্মা নদীতীরবর্তী রাজশাহীর কৃষিজমিতে কাজ করা শ্রমজীবীরা জমিতে কাজে যেতে ভয় পাচ্ছেন। গোদাগাড়ী, তানোর, বাঘা, চারঘাট, পবা, মোহনপুর, পুঠিয়া, দুর্গাপুর ও বাগমারা এলাকার কৃষিশ্রমিকদের অনেকেই কর্মের সন্ধানে এখন শহরমুখী।

বাঘা উপজেলার রবিউল ইসলাম জানান, হঠাৎ করে এবার সাপের উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে কৃষিশ্রমিকরা নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জমিতে কাজে যেতে চাচ্ছে না। তারা সাপের কারণে ভয় পাচ্ছে। অনেকেই শহরে অটোরিকশা চালাতে যাচ্ছে।

রামেক হাসপাতালের মুখপাত্র শংকর বিশ্বাস বলেন, আগের তুলনায় সাপে কাটা রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও সাপগুলোর অধিকাংশই নির্বিষ। রামেক হাসপাতালে আড়াই হাজারের বেশি অ্যান্টিভেনম প্রস্তুত রয়েছে। সুতরাং অহেতুক কেউ ভীত হবেন না এবং গুজব ছড়াবেন না। সাপে কাটলে দ্রুত চিকিৎসক বা হাসপাতালে যান।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. আবু শাহীন বলেন, সাপে কাটা রোগীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। সাপে কাটলেই এখন মানুষ হাসপাতালমুখী হচ্ছেন। এটা ভালো দিক। সাপে কামড়ালে যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে যেতে হবে। যত দ্রুত আমরা অ্যান্টিভেনম নেব তত দ্রুত আমরা ঝুঁকিমুক্ত থাকব। হাসপাতালে এখন পর্যপ্ত অ্যান্টিভেনম রয়েছে।

বিশেষজ্ঞ এই চিকিৎসক আরও বলেন, ২০২২ সালের পরিসংখ্যান অনুসারে সাপে কাটা রোগীদের ৮০ শতাংশই নির্বিষ সাপের কামড়ে আক্রান্ত হয়েছেন। রাসেলস ভাইপারের চাইতে কোবরায় কাটা রোগী বেশি। মোট সাপে কাটা রোগীর ১৪ শতাংশ কোবরা সাপে, আর ৭ শতাংশ আক্রান্ত হন রসেলস ভাইপারের ছোবলে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাপে কাটলে আক্রান্ত রোগীর নড়াচড়া বন্ধ করানো দরকার। এজন্য কাটা অংশের দুই ধারে দ্রুত বাঁশের বাতা বা কাঠ দিয়ে বেঁধে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। সাপে কাটা রোগীর মৃত্যু রোধে প্রয়োজন সামাজিক সচেতনতা

Please Share This Post in Your Social Media

ads



© All rights reserved © 2024
Developed by- .:: SHUMANBD ::.