নিজস্ব প্রতিবেদক: “কৃষি জমি রক্ষা কর, খাদ্য সুরক্ষা নিশ্চিত কর” এই স্লোগানে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার নিমাই বিল এলাকায় কৃষিজমিতে অবৈধভাবে পুকুর খননের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ ও তা বন্ধের দাবিতে আজ শনিবার সকাল ১১টায় রাজশাহীর গণকপাড়ার অংশু বুক ক্যাফেতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
এই সম্মেলনের আয়োজন করে রাষ্ট্র সংস্কার কৃষক আন্দোলন, বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরাম এবং সবুজ সংহতি, রাজশাহী মহানগর। লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন রাষ্ট্র সংস্কার কৃষক আন্দোলন বাগমারার আহ্বায়ক ও মোহনপুর কলেজের প্রভাষক মো. আমজাদ হোসেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন— পরিবেশ গবেষক মাহবুব সিদ্দিকী, অ্যাডভোকেট হোসেন আলী পিয়ারা, বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরামের যুগ্ম সম্পাদক মো. আতিকুর রহমান আতিক, জুলাই-৩৬ পরিষদের আহ্বায়ক মাহমুদ জামাল কাদেরী, পরিবেশকর্মী ঈশিতা ইয়াসমিনসহ অনেকে।
বক্তারা জানান, বাগমারা উপজেলার নিমাই বিল এলাকায় একাধিক ভূমিদস্যু ও রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা জোরপূর্বক কৃষিজমি দখল করে স্কেভেটর দিয়ে পুকুর খননের কাজ চালাচ্ছে। প্রায় ৬০ বিঘা জমিতে এই অবৈধ খনন চলছে, যা সম্পূর্ণভাবে আদালতের নিষেধাজ্ঞা ও বিদ্যমান কৃষি আইন লঙ্ঘন করে করা হচ্ছে।
বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, বিষয়টি নিয়ে বিগত ৪-৫ মাসে বিভিন্ন সময় প্রশাসনকে জানানো হয়েছে, মানববন্ধন ও স্মারকলিপিও দেওয়া হয়েছে। পরে, ১৯ মার্চ ২০২৫ তারিখে সি.আর কেস নং-৩৪৭/২০২৫ (বাগমারা) মামলা দায়ের করা হয়। এমনকি, ৮ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে হাইকোর্টে রিট দায়ের করে খনন স্থগিত করা হলেও সেই নির্দেশনা মানা হচ্ছে না। বরং ঈদ-উল-আজহার ছুটিকে কাজে লাগিয়ে রাতের অন্ধকারে ৭টি স্কেভেটর দিয়ে খননের কাজ চলছে।
সংবাদ সম্মেলন থেকে ৫ দফা দাবিও উত্থাপন করা হয়:
১. অবিলম্বে নিমাই বিলসহ রাজশাহীর সকল কৃষি জমিতে পুকুর খনন বন্ধে দৃশ্যমান ও কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
২. জড়িত ভূমিদস্যুদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
৩. সহযোগিতা করা প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের (ইউএনও, এসি-ল্যান্ড, সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তা) অপসারণ ও শাস্তি দিতে হবে।
৪. ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করে দ্রুত প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে।
৫. রাজশাহীর বিভিন্ন উপজেলায় কৃষিজমি ধ্বংস করে পুকুর খননের প্রবণতা বন্ধে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত ও তদারকি নিশ্চিত করতে হবে।
সংগঠনগুলোর দাবি— এই ধরণের অনিয়ন্ত্রিত পুকুর খননের ফলে একদিকে কৃষিজমি চিরতরে নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে খাদ্য উৎপাদনে হুমকি সৃষ্টি হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে।