রাজশাহীর পবা উপজেলার কাটাখালী পৌরসভার সাময়িক বরখাস্ত হওয়া মেয়র আব্বাস আলীকে এবার তাঁর পদ থেকে স্থায়ীভাবে অপসারণ করা হয়েছে। পৌরসভার ১২ জন কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরের অনাস্থা প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গত ২ অক্টোবর স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের পৌর শাখা-২ এর উপসচিব ফারজানা মান্নান এক প্রজ্ঞাপনে আব্বাস আলীকে মেয়রের পদ থেকে অপসারণ করেন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গত বছরের ডিসেম্বর থেকে আব্বাস আলী কারাগারে আছেন।
তাঁকে অপসারণের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় আব্বাস আলী একমাত্র আসামি। বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপন নিয়ে তাঁর বিতর্কিত অডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ায় তিনি গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে পৌরসভার ১২ জন কাউন্সিলর অনাস্থা প্রস্তাব এনেছেন। তাঁদের অভিযোগ, আব্বাস আলী বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে কটূক্তি ও অশালীন বক্তব্য দিয়েছেন।
এ ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, কাউন্সিলর ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভয়ভীতি দেখানো, আত্মীয়-স্বজন ও গুন্ডাবাহিনী দিয়ে হুমকি প্রদান; পৌরসভায় অরাজকতা, দুর্নীতি ও অনিয়মসহ বিভিন্ন অভিযোগ আনেন কাউন্সিলররা। স্থানীয় সরকার বিভাগের রাজশাহীর উপপরিচালক তাঁদের অভিযোগের তদন্ত করে মতামতসহ প্রতিবেদন দিয়েছেন।
পৌরসভার মোট সদস্য সংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশের বেশি ভোটে গৃহীত হওয়ায় আইন অনুযায়ী আব্বাস আলীকে তাঁর নিজ পদ থেকে অপসারণ করা যুক্তিযুক্ত। তাই সাময়িক বরখাস্তকৃত মেয়র আব্বাস আলীকে স্থানীয় সরকার আইন অনুযায়ী নিজ পদ থেকে অপসারণ করা হলো।
আওয়ামী লীগের মনোনয়নে পর পর দুবার কাটাখালী পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন আব্বাস আলী। তিনি পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ছিলেন। গত বছরের নভেম্বরে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নিয়ে তাঁর আপত্তিকর কথার অডিও রেকর্ড ছড়িয়ে পড়ে। এ ছাড়া তিনি রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করছেন, এমন আরেকটি অডিও রেকর্ড ফাঁস হয়। এতে রাজশাহীতে তোলপাড় শুরু হয়।
এ ব্যাপারে তাঁর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন সিটি করপোরেশনের একজন কাউন্সিলর। পরে তাঁকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এর মধ্যেই পবা উপজেলা আওয়ামী লীগ আব্বাস আলীকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেয়। এরপর তাঁর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগে আরও কয়েকটি মামলা হয়। গ্রেপ্তারের পর থেকেই আব্বাস রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন। গত বছরের ৯ ডিসেম্বর এক প্রজ্ঞাপনে আব্বাস আলীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এর ১০ মাসের মাথায় তাকে স্থায়ীভাবে অপসারণ করা হলো।