দেশে প্রতিদিন বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। সংবাদপত্র বলছে— দেশের প্রায় ৫০ জেলায় পাওয়া গেছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী। সুতরাং সতর্ক হতেই হবে। কিন্তু আপনি হয়তো লক্ষ্য করে দেখেছেন মশাদের ‘ভালোবাসা’ আপনার প্রতিই যেন একটু বেশি। অর্থাৎ আশপাশে মানুষ থাকলেও মশা আপনার প্রতিই বেশি আকৃষ্ট হয়! বলাবাহুল্য এই ভালোবাসা আপনার জন্য দুর্ভাগ্যই বটে! কারণ এ ভালোবাসা যে কোনো সময় আপনার জন্য বিপদের কারণ হতে পারে। কিন্তু অন্যদের তুলনায় মশা আপনাকেই কেন বেশি কামড়ায়?
এ নিয়ে গবেষণা কম হয়নি। গবেষণা বলছে—যাদের বেশি ঘাম হয়, মশা তাদের বেশি ভালোবাসে অর্থাৎ কামড়ায়। ঘামের সঙ্গে বেরোনো ল্যাকটিক অ্যাসিড ও অ্যামোনিয়ার গন্ধ মশাদের আকর্ষণ করে। ফলে ঘামের গন্ধে মশা ছুটে আসে।
মশা গর্ভবতী নারীদের টার্গেটে পরিণত বেশি হন। এর কারণও শরীর থেকে বের হওয়া গন্ধ। গর্ভবতী নারীদেহ থেকে নির্গত ইস্ট্রোজেন হরমোনের গন্ধে মশা আকৃষ্ট হয়।
যাদের শরীর থেকে বেশি কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসৃত হয়, তাদেরও মশা বেশি কামড়ায়। মশার মস্তিষ্কে সিপিএ নামের এক প্রকার কোষ থাকে। এই কোষ কার্বন ডাই-অক্সাইড চিনতে পারে। গবেষণাটি ‘ল্যানসেট’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।
কিছু নির্দিষ্ট রক্তের গ্রুপের মানুষকেও মশা বেশি কামড়ায়। যেমন ‘ও’ গ্রুপের রক্ত। আবার কয়েকটি গবেষণা বলছে, পোশাকের রঙ দেখেও মশা আকৃষ্ট হতে পারে। যেমন গাঢ় কোনো রঙ। যারা কালো কাপড়ে ওয়্যারড্রোব ভরে ফেলেছেন তাদের জন্য দুঃসংবাদ। কারণ মশা এই রঙের প্রতি বেশি আকর্ষিত হয়। ইউনিটি পয়েন্ট হেলথের ব্লগ লিভওয়েলে এক সাক্ষাৎকারে ডা. নিকোল এল বাউম্যান ব্ল্যাকমোর বলেন, ‘কালো, গাঢ় নীল বা লাল পোশাক পরলে আপনি মসকুইটো ম্যাগনেটে পরিণত হবেন।
যারা অন্যদের তুলনায় বেশি গরম অনুভব করেন তাদের কাছেও মশা বেশি আসে। নিয়মিত ব্যায়াম করার কারণে শরীর গরম থাকলেও মশা আকর্ষিত হয়। ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিন-মেডিসিনের এন্টোমোলজির অধ্যাপক সুসান পাসকিউইটজ বলেন, শরীরের উচ্চ তাপমাত্রা ও ল্যাকটিক অ্যাসিডের মতো ত্বকের কিছু কেমিক্যাল মশার পছন্দ। এ ছাড়াও যারা বিয়ার জাতীয় অ্যালকোহল পান করেন তাদের প্রতিও মশা বেশি আকৃষ্ট হয়।