নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীতে পর্নোগ্রাফি আইনের এক মামলায় এক পুলিশ সদস্য ও এক মুয়াজ্জিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রোববার দুপুরে তাদের আদালতের মাধ্যমে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে শনিবার রাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার ধানসুড়া বাজার এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) রাজপাড়া থানার একটি দল।
গ্রেফতার দুইজন হলেন,পুলিশ কনস্টেবল রাশেদুল ইসলাম খান (৩০) ও শহিদুল ইসলাম সুমন (৩২)। শহিদুল ইসলামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলায়। তিনি একটি মসজিদের মুয়াজ্জিন। আর আরএমপির পবা থানার বায়া পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত ছিলেন পুলিশ কনস্টেবল রাশেদুল ইসলাম খান (৩০)।
গ্রেফতারের পর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পুলিশ কনস্টেবল রাশেদুল ইসলাম খানের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর বাজারের বিশ্বাসপাড়ায়।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) রফিকুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে আরও জানান, অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ৫ মার্চ নগরীর রাজপাড়া থানার বহরমপুর এলাকায় এক নারীর সঙ্গে একজন শিক্ষকের আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করেন পুলিশ কনস্টেবল রাশেদুল ইসলাম খান ও শহিদুল ইসলাম। সেই ভিডিও দেখিয়ে শিক্ষকের কাছ থেকে তারা ৫০ হাজার এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আরও টাকা হাতিয়ে নেন দুইজন। পরবর্তীতে তারা আরও টাকা দাবি করছিলেন ওই শিক্ষকের কাছে। টাকা না দিলে ভিডিও ফাঁস করার ভয় দেখাচ্ছিলেন তারা।
ওই শিক্ষকের বাড়ি নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার চোরাপাড়া ধানসুড়া গ্রামে। শনিবার পুলিশ কনস্টেবল রাশেদুল ও মুয়াজ্জিন শহিদুল ইসলাম ওই মাস্টারের কাছে আরও টাকা নিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার ধানসুড়া বাজারে গিয়েছিলেন। সেখানেই পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে।
এ নিয়ে গত ২০ মার্চ পুলিশ সদস্য রাশেদুল ও তার সহযোগী শহিদুলকে আসামি করে রাজপাড়া থানায় পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেন ওই ভুক্তভোগী শিক্ষক। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় আরএমপি কমিশনার আনিসুর রহমান পুলিশ কনস্টেবল রাশেদুলকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। এরপর শনিবার রাতে রাজপাড়া-থানা পুলিশ মামলার দুই আসামিকে গ্রেফতার করেন ধানসুড়া বাজার থেকে। রোববার দুপুরে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আরএমপি কমিশনার আনিসুর রহমান বলেন, কোনো পুলিশ যদি অপরাধ করেন, তাহলে তারও ছাড় নেই। সাধারণ মানুষ অপরাধ করলে যেমন প্রচলিত আইনের আওতায় মামলা হয়, পুলিশের ক্ষেত্রেও তাই হচ্ছে। পুলিশ সদস্য বলেই যে কেউ অপরাধ করে পার পেয়ে যাবেন, এমনটা হতে দেওয়া হবে না।