নিজস্ব প্রতিবেদক: বরেন্দ্রভূমি খ্যাত নওগাঁর নিয়ামতপুরে তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। পাশাপাশি বিপন্ন হয়ে উঠেছে প্রকৃতি। একটু বৃষ্টির জন্য চারিদিকে হাহাকার পড়ে গেছে। রুক্ষ হয়ে উঠেছে প্রকৃতি।
এদিকে আমের রাজধানী খ্যাত এলাকায় মাঝারি ও তীব্র তাপদাহে ঝড়ে পড়ছে আমের গুটি। এ অবস্থায় ফলন বিপর্যয়ের পাশাপাশি আমের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন আম চাষিরা। তবে হতাশ না হয়ে আমগাছের গোড়ায় সেচ, নিয়মিত পরিচর্যা ও বালাইনাশক প্রয়োগের পরামর্শ দিচ্ছেন উপজেলা কৃষি বিভাগ।
অন্যদিকে তীব্র তাপদাহে বোরো ধানে সেচ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। তাপদাহ বেড়ে যাওয়ায় বোরো আবাদে দ্বিগুণ সেচ দিতে হচ্ছে। তাই উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে কৃষকেরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিয়ামতপুর উপজেলা বরেন্দ্রভূমি হওয়ায় এখানে দিন দিন পানির স্থর নিচে নেমে যাচ্ছে। এতে উপজেলার মাদারীপুর, ডাঙ্গাপাড়া, ঝাঁঝিরা, কামারপাড়া, রসুলপুর সহ বেশ কিছু এলাকায় সেচ পাম্পের পানি কমে গিয়েছে।
এতে মালিকানাধীন সেচ পাম্পের মালিক ও কৃষকেরা বোরো ধানী জমিতে পানি দেওয়া নিয়ে বিপাকে পড়েছে।
এ অঞ্চলে দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ায় মাঠ-ঘাট সব শুকিয়ে খাঁ খাঁ করছে। মাঠে মাঠে এখন বোরো মৌসুমে ধানের শীষ বের হওয়ার সময় অতিবাহিত করছে। এসময় ধানের জমিতে পানির বিশেষ প্রয়োজন। কিন্তু বৃষ্টি না হওয়ায় ধানের কাঙ্খিত ফলন বিপর্যয়ের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
নিয়ামতপুর সদর ইউনিয়নের চৌরা গ্রামের আমচাষী লতিফ বলেন, আমার ১৮ বিঘায় ৩ হাজার আম গাছ রয়েছে। মুকুল খুব সুন্দর হয়েছে আমও ফুটেছে ভালো। কিন্তু দীর্ঘ খরার কারণে আমের বোটা নষ্ট হয়ে আমগুলো ঝরে পড়ছে। এ মুহুর্তে বৃষ্টির খুব প্রয়োজন। এ রকম খরা আর কিছুদিন চললে ৭৫% আম ঝরে পড়ে যাবে। এতে আমরা অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হবো। আমি গাছে প্রতি নিয়ত পানি স্প্রে করছি। কিন্তু তাতে কি আর আম ঝরা রক্ষা করা যাচ্ছে?
উপজেলার বাগান মালিকরা বলেন, চলতি বছরে আমগাছে ব্যাপক আমের গুটি রয়েছে। তবে প্রচন্ড খরায় আম বাগানগুলোর মাটি শুকিয়ে চৌচির হয়ে গেছে। আর এতে মাটিতে রস না থাকায় আমগাছে ঝুলে থাকা গুটিগুলো ঝরে পড়ছে। প্রতিদিন মণে মণে আম ঝরছে বাগান থেকে। খুব শিগগিরই প্রাকৃতিকভাবে বৃষ্টির না হলে আম চাষিদের চরম লোকসান হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এ বিষয়ে নিয়ামতপুর কৃষি কর্মকর্তা কামরুল হাসান জানান, আম বাগানের গাছের গোড়া পানি দিতে হবে,ও আমের গুটিতে এক্সরে করতে হবে পানি, ধান ক্ষেত জমিতে পানি রাখতে হবে, আশা করছি দুই দিনের মধ্যেই আবহাওয়া স্বাভাবিক হবে।