পাবনা প্রতিনিধিঃ পাবনা সদর উপজেলার পুষ্পপাড়া হাট ও বাজারের স্থায়ী দোকানদারদের কাছ থেকে জোর করে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে শ্রমিকলীগ নেতা হাট ইজারাদারের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদে ধর্মঘট, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন দোকানদাররা।
বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) সকাল থেকে দোকান বন্ধ রেখে তারা এই কর্মসূচি পালন করেন। পরে প্রশাসনের মধ্যস্ততায় ধর্মঘট প্রত্যাহার করে দোকান খোলেন ব্যবসায়ীরা।
দোকানদার ও ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, ‘অতিরিক্ত টাকা দিয়ে পুষ্পপাড়া বাজারের ইজারা নেন স্থানীয় শ্রমিকলীগ নেতা আব্দুস সালাম। ইজারা নেয়ার পর থেকেই বাজারের স্থায়ী দোকানদারদের ওপর জুলুম-নির্যাতন শুরু করেন। দোকানপ্রতি ২০০ টাকা থেকে শুরু করে ১ হাজার পর্যন্ত চাঁদা দাবি করেন, অথচ এই দোকানগুলো পুষ্পপাড়া কামিল মাদ্রাসার অধিনস্থ। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কিনে ভবন করে স্থায়ীভাবে ব্যবসা করছেন তারা। ৫০ বছরের অধিক সময় ধরে প্রতি মাসে মাটিভাড়া হিসেবে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে টাকা দিয়ে আসছেন। কিন্তু এবার নিয়মনীতি তোয়াক্কা না করে হাট ইজারাদার আব্দুস সালাম দোকানদার কাছ থেকে চাঁদা দাবি করছেন।’
এছাড়াও নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক হাটের একাধিক ক্ষুদে ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, ‘এবার ইজারা নেয়ার পর থেকেই অতিরিক্ত খাজনা নেয়া হচ্ছে। আগে যেখানে ৫০-১০০ টাকা খাজনা নেয়া হতো, এখন সেখানে ২০০-৩০০ টাকা খাজনা নেয়া হচ্ছে। প্রতিবাদ করলেই নানান ধরনের হুমকি-ধামকি দেয়া হচ্ছে।’
পুষ্পপাড়া বাজার বণিক সমিতির সভাপতি নুরুল ইসলাম বলেন, ‘লাখ লাখ টাকা দিয়ে কিনে আমরা স্থায়ীভাবে দোকান দিয়ে ব্যবসা করছি। এই দোকানগুলো হাটের অংশ নয়, এগুলো মাদ্রাসার দোকান। কিন্তু হাটের ইজারাদার এখন জোর করেই চাঁদা দাবি করছেন। এজন্য আমরা বাধ্য হয়ে ধর্মঘট করেছি। প্রশাসনের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে আমরা এর স্থায়ী সমাধান চাই।’
অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শ্রমিকলীগ নেতা পুষ্পপাড়া হাটের ইজারাদার মো. আব্দুস সালাম। তিনি বলেন, ‘হাটের জমি নিয়ে সরকারের সঙ্গে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের মামলা চলছে। সমস্ত দোকানই হাটের অংশ, সরকারের নিয়ন্ত্রণে। আমি যেহেতু সরকারের কাছ থেকে ইজারা নিয়েছি তাই বৈধ উপায়ে তাদের কাছ থেকে খাজনা আদায় করা হচ্ছে। কিন্তু একটি পক্ষ এটা নিয়ে ষড়যন্ত্র করছেন। আমাদের সঙ্গে নিলামের ডাকে যারা হাট নিতে ব্যর্থ হয়েছেন তারা কিছু দোকানদারদের সঙ্গে নিয়ে এইসব অভিযোগ করছেন, যা সম্পূর্ণরুপে মিথ্যা ও বানোয়াট। আমার হাট যেন ভেঙে যায় এজন্য তারা ষড়যন্ত্র করছেন।’
এবিষয়ে যোগাযোগ করেও পুষ্পপাড়া কামিল মাদ্রাসার কর্তৃপক্ষের কারোও মন্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি। পাবনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাহমিদা আক্তার বলেন, ‘আপাতত সমাধান করা হয়েছে, দোকানদাররা ধর্মঘট প্রত্যাহার করেছেন। পরবর্তীতে উভয়পক্ষদের সঙ্গে আলোচনা ও তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।’