November 30, 2024, 12:48 am

News Headline :
অনৈতিক সম্পর্কের অপবাদ দিয়ে গৃহবধূকে নির্যাতন

অনৈতিক সম্পর্কের অপবাদ দিয়ে গৃহবধূকে নির্যাতন

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহীর বাঘায় অনৈতিক সম্পর্কের অপবাদ দিয়ে দু’জনকে শাস্তি হিসেবে মারধর, গলায় জুতার মালা ও যুবকের মাথার চুল কেটে দেওয়া হয়। নারী ও পুরুষকে নির্যাতনের এ অভিযোগ উঠেছে এক গৃহবধূর শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। গত ১৮ আগস্ট রাতে উপজেলার পলাশী ফতেপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে ঘটনার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিনিধির কাছে এ সংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষিত আছে।

এক ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গৃহবধূর স্বামী ঢাকায় থাকেন। ঘটনার রাতে ১০ মাস বয়সী ছেলেকে নিয়ে নিজ ঘরে শুয়ে পড়েন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসেন গৃহবধুর স্বামীর এক বন্ধু। তিনি ঘরে ঢোকা মাত্র বাইরে থেকে দরজায় শিকল দিয়ে লোক জড়ো করেন গৃহবধূর শ্বশুর। পরে অনৈতিক সম্পর্কের অপবাদ দিয়ে নির্যাতন করা হয়।

গৃহবধূর দাবি, স্বামীর বন্ধু দেখা করতে চাইলে নিষেধ করেন। কিন্তু রাতে কখন তিনি বাড়িতে এসেছেন, তা বুঝতে পারেননি। বিষয়টি নিয়ে দাদা শ্বশুর, শ্বশুর, ভাশুর, ভাশুরের স্ত্রী, চাচাতো দেবর, ননদ, ননদের স্বামী মিলে দু’জনকে শাস্তি দেন। ভয় দেখিয়ে ইউপি মেম্বার মোস্তাফিজুর রহমান শিশির কাগজে স্বাক্ষর ও ১ হাজার টাকা হাতে ধরিয়ে তাড়িয়ে দেন। পরে বাবার পরিবার চিকিৎসা করান বলে জানান তিনি।

গৃহবধূর স্বামী জানান, বাড়ি গিয়ে তিনি স্ত্রীর স্বাক্ষরিত তালাকনামায় সই করেছেন। স্থানীয় নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজী) শহিদুল ইসলাম বলেছেন, ‘ফজরের পর আমাকে ডেকে নিয়ে বিয়ে বিচ্ছেদের কথা বলা হয়। লাঞ্ছিত হওয়ার ভয়ে স্বাক্ষর দিয়ে মেয়েকে নিয়ে চলে যান তাঁর বাবা। পরে ছেলেও তালাকনামায় সই করেন।’ গৃহবধূর শ্বশুর জানান,রাগের মাথায় কারা কি করেছে জানিনা।

যুবকের বাবা জানান, খবর পেয়ে রাতেই সেখানে গেলে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছেলেকে ছাড়িয়ে আনেন। পরের দিন,পার্শ্ববর্তী মনিহারপুর গ্রামের একজন পুলিশের ভয় দেখিয়ে ১৭ হাজার টাকা নিয়ে গেছে। জানতে চাইলে সেই ব্যক্তি বিষয়টি অস্বিকার করেছেন।

গৃহবধুর বাবা জানান, ২ বছর আগে ১লক্ষ টাকা দেনমোহর ধার্য করে বিয়ে দিয়েছেন। সে সময় কানের সোনার দুল,হাতের বালা ও ২টি আংটি দিয়েছিলেন। সেগুলো সহ ১০ মাসের শিশু সন্তানকেও রেখে খালি হাতে বিদায় করে দিয়েছে। তালাকের আগে-পরে দেনমোহর বাবদ কোন টাকা দেওয়া হয়নি জানান।

স্থানীয় মেম্বার মোস্তাফিজুর রহমান শিশির জানান, তারা নিজেরাই মিটমাট করে ছেলে-মেয়েকে চলে গেছে। আগে কারা কি করেছে তা জানেন না। ইউপি চেয়ারম্যান মনোয়ার বাবুল বলেন, পরের দিন গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে ঘটনা শুনেছেন।
অফিসার ইনচার্জ (ওসি)খায়রুল ইসলাম জানান,অভিয়োগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিজের হাতে বিচার তুলে নিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন মানবাধিকার সংগঠন,ন্যাশনাল প্রেস সোসাইটি(এনপিএস)’র কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ন সাধারন সম্পাদক আখতার রহমান।

Please Share This Post in Your Social Media

ads



© All rights reserved © 2024
Developed by- .:: SHUMANBD ::.